ঢাকা,বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

বিএনপির আরো চার এমপি শপথ নিচ্ছেন

নিউজ ডেস্ক ::

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী বিএনপির ছয় সদস্যের মধ্যে শপথ নিয়েছেন একজন। বাকি পাঁচজনের মধ্যে বিএনপির মহাসচিব ও বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ নিচ্ছেন না বলে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে ঘোষণা আছে। বগুড়া-৪ আসন থেকে নির্বাচিত মোশাররফ হোসেনের মোবাইল ফোন নম্বর বন্ধ আছে দুই দিন ধরে। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবারই তিনি শপথ নিচ্ছেন। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে নির্বাচিত উকিল আব্দুস সাত্তার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুনুর রশিদ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম শপথ নেওয়ার পক্ষে বলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সাত্তার, হারুন ও আমিনুল শপথ নেওয়ার বিষয়ে নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ সেরেছেন। সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে গতকাল রবিবার তিনজনই কালের কণ্ঠ’র কাছেও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন।

জানা গেছে, গত শনিবার গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে ওই তিন এমপির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন সিনিয়র নেতারা। তাঁদের শপথ না নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয় তখন। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নিলে বহিষ্কার করা হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। তবে বহিষ্কারের হুমকিকে পাত্তা দিচ্ছেন না তাঁরা।

উকিল আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘বহিষ্কার করে কী পথ আটকানো যায়?’ তিনি আরো বলেন, ‘সময় তো এখনো আছে, দেখি কী সিদ্ধান্ত নেই।’

সংসদে যোগদানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমি চারবার এমপি ছিলাম। অর্থের বিনিময়ে আমাকে সংসদে নেওয়া যাবে এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে আমি মনে করি, সংসদে গিয়ে নেত্রীর মুক্তির পক্ষে কথা বলা গেলে সেটি মানুষের কাছে দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছে যাবে।’ হারুন অবশ্য বলেন, ‘এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি। দেখি কী করা যায়।’

সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সময় তো প্রায় শেষ। কালকের (সোমবার) মধ্যেই সিদ্ধান্ত সবাইকে জানাব।’

বিএনপির দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ায় জাহিদুর রহমান জাহিদের বহিষ্কারাদেশের চিঠি এরই মধ্যে তাঁর ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য এমপিরা যদি শপথ নেন তাঁদেরও ওই দিনই বহিষ্কার করা হবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংসদে যোগ না দেওয়ার। এখন সেটি অমান্য করলে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জাহিদের মতো বাকিদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত জাহিদুর রহমান জাহিদ ২৫ এপ্রিল স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর কাছ থেকে শপথ নিয়েছেন। গত শনিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তাঁকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি।

তিন এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন নেতারা : গতরাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উকিল আব্দুস সাত্তার, হারুনুর রশিদ ও আমিনুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা তিনজনকে শপথ না নেওয়ার অনুরোধ করেন। পরে এমপিদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেন তারেক রহমান। কিন্তু তাতেও রাজি করানো যায়নি তাঁদের।

জানা গেছে, বিএনপির এ এমপিরা এলাকাবাসীসহ নানামুখী চাপের কথা তুলে ধরেছেন নেতাদের কাছে।

এরপর স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্যের মধ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অংশ নেন। স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, তিন এমপির সঙ্গে কথা বলে তাঁদের শপথগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু মনে হয়েছে, তাঁরা শপথ নেবেনই। যদি তাঁরা শপথ নেন, তাহলে স্থায়ী কমিটির নেতারা একমত হয়েছেন যে জাহিদুর রহমানের মতো তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।কালের কণ্ঠ

পাঠকের মতামত: